যশোর শহরতলীর শেখহাটি আদর্শপাড়ায় এক নারীকে গলা কেটে, মাথা ও বুকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহতের নাম শাহানারা বেগম (৫০)। তিনি ওই গ্রামের ইজিবাইক চালক আতিয়ার রহমানের স্ত্রী। ঘরের তালা ভেঙে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া পলাতক রয়েছেন। আতিয়ার-শাহানারা দম্পতির ৩ ছেলেমেয়। তারা বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জানিয়েছে, আতিয়ার তার স্ত্রীকে ৩০ অক্টোবর সকালে ডায়াবেটিক হাসপাতাল থেকে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়িতে ফেরেন। তিনি ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান দুপুর ২ টার দিকে। রাত ১০ টার দিকে ফিরে দেখেন বাড়ির মূল ফটক ও ঘরের সব দরজায় তালা দেওয়া। স্ত্রীর নাম্বারে ফোন দিয়ে তা বন্ধ পান। এসময় ছেলে ইউসুফকে ডেকে নিয়ে আত্মীয় স্বজনের বাড়িসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুজি এবং থানা পুলিশকে অবহিত করেন। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে তারা ঘরের দরজার সাথে রক্তমাখা কাপড় দেখে তাল ভেঙে ভিতরে শাহানারার মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
আতিয়ার, তার ছেলে ইউসুফ ও সোহেল জানিয়েছেন, সদর উপজেলার তালবাড়ীয়া গ্রামের বাবলা তাদের বাড়িতে তিন মাস আগে থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন। ওই বাড়িতে যাতায়াত ছিল বাবলার খালাতো ভাই সুমনের। সম্প্রতি তারা জানতে পারেন বাবলা ও সুমন মাদক ও চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। তাদেরকে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ছিল। অবশ্য ৪/৫ দিন আগে বাবলা তার পরিবারকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়ে সুমনকে নিয়ে ওই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। বুধবার সকালে শাহানারার সাথে তাদের বেশ ঝগড়াও হয়। তাদের ধারণা, বাবলা ও সুমন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন। তারা কিছু স্বর্ণালংকারও নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন আতিয়াররা।
প্রতিবেশীরা জানান, বুধবার বিকেলে ওই দুই যুবককে তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে দেখেন। তাদের ধারণা, বাবলা ও সুমন হত্যার পর স্বর্ণালংকার লুট করে পালিয়েছে।
যশোর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, কারা কি কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মরদেহের পাশে একটি রহস্যজনক নোটপ্যাড পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তিনি এবিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।