‘যশোরের দুঃখখ্যাত ভবদহ অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। রোববার যশোরের অভয়নগর উপজেলার আমডাঙ্গা খাল, সুন্দলী, বিল কপালিয়া ও ভবদহ সুইসগেট এলাকা পরিদর্শনকালে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে তিনি দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, যশোরের ভবদহ জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে নতুন পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। তবে বিগত সময়ের মতো পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিভিন্ন সংস্থার মতামতে নয় এবার ভুক্তভোগীদের পরামর্শে নেয়া প্রকল্প অনুযায়ী কাজ হবে।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা সেই পথে চলছি, যেটা জনগণ চায়, ভুক্তভোগীরা চায়। এখানে এসে বুঝেছি এখনকার জনগণের এখন সাহায্যের প্রয়োজন। বিভিন্ন সংস্থার যে ঋণ রয়েছে সেটা শিথিল করা হবে। আমাকে জানতে হবে ভবদহ নিয়ে বিগত সময়ে কত প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ প্রকল্প নেওয়া হলেও কেন এই সমস্যা আবারও ফেরত আসে। আমরা যখন এসব বিষয় বিশ্লেষণ করতে পারবো, তাহলে আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সুবিধা হবে।
বিগত সময়ে ভবদহ এলাকার প্রকল্পে দুর্নীতি প্রসঙ্গে এই উপদেষ্টা বলেন, এর আগে ভবদহ এলাকায় এসেছি। এখানকার মামলা নিয়েও লড়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও আগের কাজগুলো নিয়ে ভবদহবাসীর মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভ। তাই আগের প্রকল্পের মূল্যায়নের সঙ্গে দোষী সাব্যস্ত করার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি নতুন প্রকল্প যাতে স্বচ্ছতার সঙ্গে হয় সে কারণে ভুক্তভোগী ও ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে একটা কমিটি করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, এখানে অবৈধভাবে খাল দখল বা ঘের রয়েছে সেগুলো জেলা প্রশাসন দখলমুক্ত করবে। যারা ঘের করে মাছ চাষ করছে, তাদের নীতিমালা মেনেই মাছ চাষ করা হবে। মাছ চাষের জন্য এখানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়, ভোগান্তি বাড়ে তাহলে মানুষের জীবন জীবিকাকে তো আর জিম্মি করে ঘেরকে রক্ষা করতে পারি না। যারা অবৈধভাবে মাছের ঘের চালাচ্ছেন তাদের জন্য স্পষ্ট বার্তা নিয়ে নেন এই অবৈধ ঘের তাদের সরাতে হবে।
এর আগে রোববার সকালে অভয়নগর উপজেলার আমডাঙা খাল পরিদর্শন করেন পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এসময় তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাদের কাছ থেকে সমস্যা ও সমাধানের পরামর্শ গ্রহণ করেন।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞা, যশোরে জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম প্রমুখ।