জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ ও পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে ৬৫০ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও অস্থিরতা বিষয়ে প্রাথমিক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদন ১৬ আগস্ট জেনেভা থেকে প্রকাশিত হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহর ঘুরে সহিংসতার শিকার ব্যক্তি, ভুক্তভোগীদের স্বজন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে বাংলাদেশ এসেছেন জাতিসংঘ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
জাতিসংঘের একটি সূত্র জানিয়েছে, আট সদস্যের তথ্যানুসন্ধান দলের দুজন সদস্য আজ সোমবার ঢাকায় আসছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছাবেন আরও তিনজন সদস্য। মূলত আগামীকালই আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের কাজ শুরু হবে। তথ্যানুসন্ধান দলের অন্য সদস্যরাও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ঢাকায় চলে আসবেন।
প্রাথমিকভাবে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল বাংলাদেশে চার সপ্তাহ অবস্থান করবে। তদন্তের জন্য প্রয়োজন হলে আরও কয়েক দিন তারা থাকতে পারে। জাতিসংঘ ও অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক সূত্র এসব বিষয় নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, তথ্যানুসন্ধান দলটি গত জুলাই ও আগস্টের শুরুর দিকে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ ১৫ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করবে। তদন্ত প্রতিবেদন আগামী নভেম্বরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেওয়া হতে পারে।
তথ্যানুসন্ধান দল বাংলাদেশে মাঠপর্যায়ে কাজ শেষ করে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবে। ওই প্রতিবেদনে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নৃশংস ঘটনার মূল উৎস বিশ্লেষণ করা হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সুপারিশ তুলে ধরা হবে।
সূত্রটি জানিয়েছে, তদন্তের সময় তথ্যানুসন্ধানী দল যেসব সাক্ষ্য–প্রমাণ সংগ্রহ করবে, তা গোপনীয়তার সঙ্গে সংরক্ষণ করা হবে। তথ্যানুসন্ধানী দল জাতিসংঘের স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ করে তদন্তের কাজ শেষ করবে। একই সঙ্গে তথ্যানুসন্ধানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পাশাপাশি অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।