ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়। মঙ্গলবার ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এ ১০০ কোটি টাকা অনুদান দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই তহবিল থেকে প্রাথমিকভাবে প্রত্যেক শহীদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা এবং আহত প্রত্যেক ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা করে দেওয়া হবে।
আজ বুধবার ফাউন্ডেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই সভা হয়। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। উল্লেখ, আগেই সিদ্ধান্ত আছে, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার খরচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেবে। আজ ফাউন্ডেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আহত ব্যক্তিদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আর শহীদদের পরিবারের জন্য চেক হস্তান্তর করা হবে রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে।
উল্লেখ্য, শহীদদের তালিকা চূড়ান্ত হলে তাঁদের নিয়ে ঢাকায় একটি স্মরণ সভার পরিকল্পনা করছে সরকার। ইতিমধ্যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৮০০ জন শহীদ হয়েছেন এবং ২০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। শহীদদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে স্মরণ সভাটি অনুষ্ঠিত হবে।
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কমিটি সমাজের সব স্তরের মানুষ, প্রবাসী, সংস্থা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতি ফাউন্ডেশনে অনুদান দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
কমিটি আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই ফাউন্ডেশনের জন্য একটি কার্যালয় করা হবে এবং স্বেচ্ছাসেবকেরা সেটি পরিচালনা করবেন। গণ-অভ্যুত্থানের ভিডিও, ছবি, মৌখিক ইতিহাস ও অন্যান্য নথি ও স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করবে এই ফাউন্ডেশন।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এই ফাউন্ডেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটিকে সফল করার জন্য আমাদের কঠোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, এই ফাউন্ডেশনে ক্ষুদ্র অনুদানও নথিভুক্ত করা হবে এবং দাতাদের তালিকা সংরক্ষণ করা হবে। সম্ভব হলে তাদের নাম ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
সভায় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ) ও কোষাধ্যক্ষ কাজী ওয়াকার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।