‘পানি সরাও, জীবন বাঁচাও, অবিলম্বে টিআরএম চালু কর, আমডাঙা খাল সংস্কার কর’ এমন স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর। রোববার ভবদহ জলাবদ্ধ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ দ্রুত পানি সরানোর দাবিতে আজ যশোরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজন তাদের দাবিসমূহ উত্থাপন করে বক্তব্য দিতে থাকেন।
দুপুর একটার দিকে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদের সেলফোনে ভার্চুয়ালি অংশ নেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
উপদেষ্টা উপস্থিত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের উদ্দেশে বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার নাগাদ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ একটি টিম ভবদহ অঞ্চলে যাবেন। তারা আপনাদের সাথে কথা বলে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান কীভাবে করা যায়- সে বিষয়ে আলোচনা করবেন। এরপর বিষয়টি আমি উপদেষ্টা পরিষদে উত্থাপন করবো। এবার আর সমস্যার সমাধান আশপাশ দিয়ে হবে না।
তিনি বলেন, এতোদিন আমি আপনাদের সঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। এখন এই সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব আমার পরে বর্তেছে। সমাধান যেন আপনাদের মতামতের ভিত্তিতে হয়- অবশ্যই সেই বিষয়টি যতো দ্রুত সম্ভব তা সুনিশ্চিত করা হবে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে যেন এই সমস্যার সমাধানে কাজ করা হয় আপনাদের এই দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করে বলতে চাই, এই বিষয়টি আমি তাদের সঙ্গেও আলোচনা করবো।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ উত্থাপিত ভবদহ অঞ্চলে ব্যাংক ও এনজিওর সুদ মওকুফ, ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তার দাবির বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিৎ বাওয়ালীর সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত অধ্যাপক অনিল বিশ্বাস, প্রভাষক কানু বিশ্বাস, তারক বিশ্বাস, হাবিবুর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন। এ সময় জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তৃতা করেন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বাসদ নেতা হাচিনুর রহমান, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ নেতা তসলিম উর রহমান, সিপিবি নেতা অ্যাড. আমিনুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাশেদ খান প্রমুখ।
অবস্থান চলাকালে বেলা পৌনে দুইটার দিকে যশোরের জেলা প্রশাসক মোঃ আজাহারুল ইসলাম কালেক্টরেট চত্বরে এসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দেওয়া স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের দাবির সাথে একমত পোষণ করেন এবং সেগুলো বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।