যশোরের কেশবপুরে ২৭ বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির উদ্যোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর ওই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যশোর জেলার অন্তর্গত কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার ভেতর অবস্থিত ২৭ বিল। এ বিলের চারপাশে ৬টি ইউনিয়নের ৬৮টি গ্রাম রয়েছে। এ বিলে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর ধানী জমি রয়েছে। প্রায় তিন যুগ যাবৎ বিলটিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ক্রমান্বয়ে স্থায়ীরূপ লাভ করেছে। গতবছরও এ বিলে ৮০ ভাগ জমিতে বোরো আবাদ হয়নি। মানুষের বসতবাড়িতে পানি, রাস্তাঘাট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডুবে গেছে। মানুষের বাড়িঘর ছাড়তে হচ্ছে। দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ। কেউ মৃত্যুবরণ করলে অন্যত্র দাফন করতে হচ্ছে। এ ছাড়া ফলদ ও বনজ বৃক্ষ মারা যাচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে গবাদিপশুর খাদ্য সংকটসহ জীবন জীবিকা, কর্মসংস্থান, অর্থনীতি, শিক্ষা, খাদ্য ও সামাজিক কর্মকান্ডের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত ৫ দফা দাবির ভেতর রয়েছে, শ্রীহরি নদী জরুরি ভিত্তিতে খনন ও পানি পাম্প আউট করে অতিদ্রুত বসতবাড়ির পানি নামিয়ে দেয়া এবং আগামীতে বোরো আবাদ উপযোগী করে তোলা, স্থায়ী সমাধানের লক্ষে বিল কপালিয়ায় টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট-টিআরএম (জোয়ারাধার) প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সহজ শর্তে জমির মালিকদের ক্ষতি পূরণ দেওয়া, প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা, সকল নদী ও খাল দখলমুক্ত করা এবং সমস্যা সমাধানে লোকজ জ্ঞানের গুরুত্ব দেওয়া।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের নিকট স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক বাবুর আলী গোলদার, যুগ্ম আহ্বায়ক সনজিত বিশ্বাস, সদস্য আব্দুল গফফার, কৃষক গাজী আব্দুল হামিদ, সৈয়দ আকমল আলী, বৈদ্যনাথ সরকার, শওকত হোসেন, রবিউল আলম, সুফিয়া পারভীন শিখা, সনৎ বসু হরি, অলিয়ার রহমান, রিপন শেখ, নওশের আলী, রজব আলী, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক বাবুর আলী গোলদার বলেন, ২৭ বিলসহ উপজেলার বিল গরালিয়া, পাঁজিয়া পাথরা, টেপু বলধালি বিলের জলাবদ্ধতা নিরসন এবং হরিহর, আপারভদ্রা ও বুড়িভদ্রা নদী খননের মাধ্যমে পানিপ্রবাহ সচল রাখার দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন বিষয়ে স্মারকলিপি পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপিটি প্রেরণ করা হবে।