ভারতের অন্যতম বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান টাটা গ্রুপের ইমেরিটাস চেয়ারম্যান রতন টাটা মারা গেছেন। বুধবার মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। টাটা গ্রুপ এক বিবৃতিতে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। বুধবার তাঁকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিও) ভর্তি করা হয়। এর পর তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়ায়। এ অবস্থায় একটা পর্যায়ে তাঁর মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে টাটা গ্রুপ। তাঁর মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শোক জানিয়েছেন।
১৯৯১ সালে রতন টাটা শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হন। ১০০ বছরের বেশি সময় আগে তাঁর প্রপিতামহ এই শিল্পগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ২০১২ সাল পর্যন্ত রতন টাটা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। রতন টাটা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ১৯৯৬ সালে টাটা টেলিসার্ভিসেস প্রতিষ্ঠা করা হয়।
ধনসম্পদ তো অনেকেই অর্জন করেছেন এই দুনিয়ায়। কিন্তু রতন টাটা শুধু ধনকুবের হিসেবে নন, একজন মানুষ হিসেবেও সবার কাছে সমাদৃত হয়েছেন তাঁর বর্ণাঢ্য অথচ চিরকুমার জীবনকালে। তার অসংখ্য বাণীর মধ্যে এই দশটি বিশ্বে সমাদৃত।
১. আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিশ্বাসী নই। সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটাকে সঠিক প্রমাণ করি আমি ।
২. দ্রুত হাঁটতে চাইলে একাই হাঁটো। কিন্তু অনেক দূর হাঁটতে চাইলে সবাইকে নিয়েই হাঁটতে হয়।
৩. লোহাকে তার নিজের মরিচাই পারে ধ্বংস করতে। ঠিক তেমনি একজন মানুষকে শেষ করে দিতে পারে তাঁর নিজের মানসিকতা।
৪. সবাই তোমার দিকে যে পাথরগুলো ছুড়ে মারবে, সেগুলো রেখে দাও। আর তারপর তা দিয়ে নিজের সাফল্যের মনুমেন্ট গড়ো।
৫. জীবনের পথে ওঠা ও নামা দুটিই খুব জরুরি। কারণ, ইসিজিতে যদি সরলরেখা আসে, তার অর্থ হচ্ছে আমরা মারা গিয়েছি।
৬. সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিজেই ভবিষ্যৎ তৈরি করা।
৭. সফলতা পেলে তা নিজের মস্তিষ্কে গেঁথে ফেলা যাবে না, আর বিফল হলে তাতে হৃদয়কে ভেঙে পড়তে দেওয়া যাবে না।
৮. সবার কাছে তুমি যে সম্মান অর্জন করেছ, সেটিই তোমার সবচেয়ে বড় সম্পদ। একে রক্ষা করতে হবে।
৯. বিজয়ে বিনম্র হও। আর হেরে গেলে মাথা উঁচু করে সে পরাজয় বরণ করে নাও।
১০. আমাদের সবার মেধা ও প্রতিভা এক নয়, কিন্তু তা কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে আমরা সবাই সমানভাবে সুযোগ পেয়ে থাকি।
এমন আরও অনেক কথা এই জ্ঞানী মানুষটি আমাদের শিখিয়ে গিয়েছেন। ছয় দশক ধরে বৈশ্বিক ব্যবসায়িক অঙ্গনে নিজের আলাদা অবস্থান জানান দেওয়া এই বিজনেস টাইকুন কখনো কোনো নিন্দনীয় বিতর্ক বা স্ক্যান্ডালে জড়াননি। নিজের কিছু নীতি ও মূলমন্ত্র মেনে চলা এই মানুষটি তাই চিরস্মরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে থাকবেন বিশ্ববাসীর কাছে।