• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

না থেকেও আছেন শহীদ আবু সাঈদ

জয়দ্যুতি ডেস্ক / ১৩৪ বার দেখা হয়েছে
সর্বশেষ : সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

ইবতেদায়ী জেনারেল শিক্ষক (ইংরেজি ও বাংলা বিষয়) পদে লিখিত পরীক্ষায় তিনি অংশ নিয়েছিলেন। পরীক্ষায় তাঁর রোল নম্বর ছিল ২০১২৫৬২৯৭। বাবার নাম মো. মকবুল হোসেন। মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম। আজ বিকেলে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। প্রকাশিত ফলে রংপুর বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। আজ প্রকাশিত ফলাফলে তাকে অভিনন্দনও জানানো হয়েছে। তবে এখন এ সবের অনেক উর্ধ্বে তিনি। জাগতিক মায়া কাটিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন অনন্তলোকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া শহীদ আবু সাঈদ।  এই ফল যখন সবার জন্য উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করেছে তখন তার পরিবারে আবারো নেমে এসেছে শোকের মাতম। শহীদ আবু সাঈদ আবারো সামনে এলেন, অনুভূতিকে নতুন করে জাগিয়ে দিয়ে গেলেন।

জুলাইয়ের ১২ ও ১৩ তারিখে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তখন কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন বেশ বেগবান। সারাদেশের মতো রংপুরেও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। চলতি বছরের জুনের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনে শুরু থেকেই সক্রিয় ছিলেন আবু সাঈদ। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যেই তিনি অংশ নেন লিখিত পরীক্ষায়। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় তথা রংপুর অঞ্চলে আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন আবু সাঈদ। তিনি রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসাবে এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। গত ১৬ জুলাই দুপুর ১২টা। এ সময় থেকে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। আবু সাঈদ এ আন্দোলনে সম্মুখভাগে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থী ও পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। সেসময়  একটি লাঠি হাতে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়ে পড়েন অকুতোভয় আবু সাঈদ। তার সঙ্গের আন্দোলনকারীরা যখন কিছুটা পেছনে ছিলেন, তখন তিনি পুলিশের একেবারে কাছাকাছি গিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সেসময় পুলিশের একজন সদস্য তাকে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে কয়েক রাউন্ড বুলেট ছুড়তে থাকেন। যা আবু সাঈদের বুকে ও পেটে আঘাত হানে। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুতে কোটা সংস্কার আন্দোলন আরও বেগবান হয়।

আবু সাঈদ ২০০১ সালে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ৯ ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। স্থানীয় জাফরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপরে স্থানীয় খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। ২০১৮ সালে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। ২০২০ সালে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন তিনি। আবু সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর...